বাংলাদেশের পুরনো দিনের অনেক রাজা-বাদশাহের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখযোগ্য। তাদের মধ্যে রয়েছেন:
- গৌড়ের রাজা শশাঙ্ক (৫৯০-৬২৫ খ্রিস্টাব্দ): শশাঙ্ক ছিলেন গৌড়ের এক শক্তিশালী রাজা। তিনি বাংলার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছেন। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
- পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল (৭৫০-৭৭০ খ্রিস্টাব্দ): গোপাল ছিলেন পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তিনি বাংলায় শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
- পাল সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা ধর্মপাল (৭৭০-৭৮১ খ্রিস্টাব্দ): ধর্মপাল ছিলেন পাল সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তিনি বাংলায় শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন।
- সেন সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বিজয়সেন (১০৭০-১১১৯ খ্রিস্টাব্দ): বিজয়সেন ছিলেন সেন সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তিনি বাংলায় শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি হিন্দুধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
- সেন সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা লক্ষ্মণসেন (১১৭৮-১২০৫ খ্রিস্টাব্দ): লক্ষ্মণসেন ছিলেন সেন সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তিনি বাংলায় শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি হিন্দুধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
- তুর্কি আমল (১২০৪-১৩০০): বাক্তিয়ার খিলজির আক্রমণের মাধ্যমে বাংলায় তুর্কি শাসনের সূচনা হয়। এই সময়ে বাংলায় ইসলাম ধর্মের প্রচার শুরু হয় এবং অনেক মসজিদ এবং মাদ্রাসা নির্মিত হয়।
- দেব বংশ (১২৫০-১৩০০): এই বংশের অধীনে বাংলায় হিন্দু ধর্ম এবং সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ ঘটে। রাজা বিজয় সেন এবং তার উত্তরসূরিরা বাংলায় শান্তি এবং সমৃদ্ধি বজায় রাখেন।
- সুলতান বলবনের শাসন (১২৭৯-১২৮৭): দিল্লির সুলতান বলবন বাংলায় তার প্রভাব বিস্তার করেন এবং একটি কঠোর শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
- ইলিয়াস শাহী বংশের পূর্ববর্তী শাসকরা (১২৮৭-১৩০০): বলবনের মৃত্যুর পর বাংলায় বিভিন্ন শাসকের উত্থান ঘটে, যারা পরবর্তীতে ইলিয়াস শাহী বংশের পথ প্রশস্ত করে দেয়।
- শুরুর দিকের সুলতানরা (১৩০০-১৩৫০): সেন রাজবংশের পতনের পর বাংলা সুলতানাতের প্রতিষ্ঠা হয়। শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহ এবং তার উত্তরসূরিরা কেন্দ্রীয় প্রশাসনের ভিত্তি স্থাপন করেন এবং অঞ্চলটিতে ইসলামীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেন।
- ইলিয়াস শাহী বংশ (১৩৫২-১৪১৪): শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা, যিনি বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলকে একত্রিত করে একটি একক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
- গণেশ বংশ (১৪১৪-১৪৩৫): বাংলার মুসলিম শাসনের পরিবর্তন আসে রাজা গণেশের উত্থানের মাধ্যমে, যিনি একজন হিন্দু শাসক ছিলেন। তার বংশের লোকেরা পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে, এবং তার পুত্র জালালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহ পুনরায় সুলতানাতকে মুসলিম শাসনে ফিরিয়ে আনেন।
- হুসেন শাহী বংশ (১৪৯৪-১৫৩৮): এই বংশটি বাংলার স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচিত, যেখানে সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ অঞ্চলের সীমানা বিস্তার করেন এবং বাংলা সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণে উৎসাহ দেন। সাহিত্য, শিল্প এবং স্থাপত্য কলা প্রস্ফুটিত হয়, অনেক কৃতি সৃষ্টি হয় যা আজও শ্রদ্ধেয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ১২০০ থেকে ১৩০০ সাল পর্যন্ত সময়কাল ছিল এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যুগ, যখন বাংলা তার প্রাচীন রাজত্ব এবং সামন্ত প্রথার অবসান ঘটিয়ে মধ্যযুগীয় সুলতানাতের শাসনে প্রবেশ করে। এই সময়ে বাংলার শাসন ক্ষমতা ছিল বিভিন্ন রাজা এবং সামন্ত প্রভুদের হাতে, যারা তাদের রাজত্বে বিভিন্ন সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করেছিলেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৩০০ থেকে ১৫০০ সাল পর্যন্ত সময়কাল ছিল এক উল্লেখযোগ্য যুগ, যখন বাংলা সুলতানাতের শাসন ছিল প্রধান। এই সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অগ্রগতি ঘটেছিল যা আজও তার ঐতিহ্যে স্পষ্ট।
বাংলাদেশের গৌড়ের রাজা শশাঙ্ক
শশাঙ্ক ছিলেন খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীর একজন শক্তিশালী রাজা, যিনি বাংলার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছেন। তিনি ছিলেন গৌড়ের সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি বাংলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র রাজ্যকে একত্র করে গৌড় জনপদ গড়ে তোলেন।
শশাঙ্কের জন্ম ও বংশ পরিচয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয় যে, তিনি ছিলেন পরবর্তী গুপ্ত রাজবংশের একজন শাখার বংশধর। তিনি প্রথমে গৌড়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং মগধে দৃষ্টি দেন। সেই সময়ে মগধ মৌখরি শাসনের অধীনে ছিল এবং শশাঙ্ক আবার এটিকে মুক্ত করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন।
শশাঙ্ক তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন এবং তিনি মগধের মৌখরি শাসকদের পরাজিত করেন। এরপর, তিনি ওড়িশা, মধ্য প্রদেশের কিছু অংশ এবং বিহারে তার রাজ্য সম্প্রসারণের দিকে মনোনিবেশ করেন। যদিও শশাঙ্ক গৌড়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত, কিন্তু তার রাজ্য বঙ্গ ও গৌড়ের চেয়েও অনেক বড় ছিলো। তাঁর রাজ্য বঙ্গ থেকে ভুবনেশ্বর পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছিল এবং পূর্বদিকে কামরূপ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
শশাঙ্ক ছিলেন একজন দক্ষ শাসক। তিনি তার রাজ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন মঠ ও বিহার নির্মাণ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলি সংস্কার করেন।
শশাঙ্কের শাসনকাল বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তিনি বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
শশাঙ্কের অবদান
শশাঙ্কের অবদানগুলি নিম্নরূপ:
- রাজনৈতিক অবদান: শশাঙ্ক বাংলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র রাজ্যকে একত্র করে গৌড় জনপদ গড়ে তোলেন। তিনি বাংলায় শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন।
- ধর্মীয় অবদান: শশাঙ্ক ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন মঠ ও বিহার নির্মাণ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলি সংস্কার করেন।
- সাংস্কৃতিক অবদান: শশাঙ্ক বাংলার সাংস্কৃতিক উন্নতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলায় শিক্ষা ও শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে উৎসাহিত করেন।
শশাঙ্কের মৃত্যুর পর তার রাজ্য ভেঙে পড়ে। তবে তার অবদানগুলি বাংলার ইতিহাসে চিরকাল অম্লান থাকবে।
বাংলাদেশের পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল
গোপাল ছিলেন পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ৭৫০ থেকে ৭৭০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। গোপাল বাংলার শতবর্ষব্যাপী চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর করে শাসনভার গ্রহণের জন্য সুপরিচিত।
গোপালের জন্ম ও বংশ পরিচয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয় যে, তিনি ছিলেন একজন বৌদ্ধ ব্রাহ্মণ। তিনি প্রথমে গৌড়ের একটি ক্ষুদ্র রাজ্যে শাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর, তিনি বাংলার অন্যান্য ক্ষুদ্র রাজ্যগুলিকে একত্রিত করে পাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
গোপাল ছিলেন একজন দক্ষ শাসক। তিনি তার রাজ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন মঠ ও বিহার নির্মাণ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলি সংস্কার করেন।
গোপালের শাসনামলে পাল সাম্রাজ্য বাংলার ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা করে। তিনি বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
গোপালের অবদান
গোপালের অবদানগুলি নিম্নরূপ:
- রাজনৈতিক অবদান: গোপাল বাংলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র রাজ্যকে একত্রিত করে পাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলায় শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন।
- ধর্মীয় অবদান: গোপাল ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন মঠ ও বিহার নির্মাণ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলি সংস্কার করেন।
- সাংস্কৃতিক অবদান: গোপাল বাংলার সাংস্কৃতিক উন্নতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলায় শিক্ষা ও শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে উৎসাহিত করেন।
গোপালের মৃত্যুর পর তার পুত্র ধর্মপাল পাল সাম্রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন। ধর্মপাল ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তিনি তার পিতার মতোই বাংলার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ধর্মপাল: বাংলাদেশের পাল সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা
ধর্মপাল ছিলেন পাল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় রাজা। তিনি ৭৮১ থেকে ৮২১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। ধর্মপাল ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তিনি তার পিতার মতোই বাংলার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ধর্মপালের জন্ম ও বংশ পরিচয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয় যে, তিনি ছিলেন একজন বৌদ্ধ ব্রাহ্মণ। তিনি তার পিতার কাছ থেকে রাজ্যভার গ্রহণ করেন এবং তিনি ছিলেন একজন দক্ষ শাসক। তিনি তার রাজ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন।
ধর্মপালের শাসনামলে পাল সাম্রাজ্য তার শীর্ষে পৌঁছেছিল। তিনি তার সাম্রাজ্যের সীমানা উত্তরে দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট সাম্রাজ্য এবং দক্ষিণে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন মঠ ও বিহার নির্মাণ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলি সংস্কার করেন।
ধর্মপালের অবদানগুলি নিম্নরূপ:
- রাজনৈতিক অবদান: ধর্মপাল পাল সাম্রাজ্যকে আরও শক্তিশালী করেন এবং তার সীমানা বিস্তৃত করেন। তিনি বাংলায় শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন।
- ধর্মীয় অবদান: ধর্মপাল ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন মঠ ও বিহার নির্মাণ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলি সংস্কার করেন।
- সাংস্কৃতিক অবদান: ধর্মপাল বাংলার সাংস্কৃতিক উন্নতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলায় শিক্ষা ও শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে উৎসাহিত করেন।
ধর্মপালের শাসনামলে পাল সাম্রাজ্য বাংলার ইতিহাসে একটি স্বর্ণযুগের সূচনা করে। তিনি বাংলার রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ধর্মপালের সময়কালে নির্মিত কিছু উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য নিম্নরূপ:
- পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার: পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার পাল সাম্রাজ্যের অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য। এটি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বগুড়া জেলায় অবস্থিত।
- সোমপুর মহাবিহার: সোমপুর মহাবিহার পাল সাম্রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ বৌদ্ধ বিহার। এটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নেত্রকোণা জেলায় অবস্থিত।
- নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়: নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। এটি পাল সাম্রাজ্যের সময়কালে তার স্বর্ণযুগ লাভ করে।
ধর্মপালের মৃত্যুর পর তার পুত্র দেবপাল পাল সাম্রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন। দেবপালও ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তিনি তার পিতার মতোই বাংলার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বিজয়সেন: বাংলাদেশের সেন সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা
বিজয়সেন ছিলেন সেন সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১০৯৭ থেকে ১১৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তিনি তার রাজ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন।
বিজয়সেনের জন্ম ও বংশ পরিচয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয় যে, তিনি ছিলেন একজন কর্ণাটীয় ব্রাহ্মণ। তিনি প্রথমে গৌড়ের একটি ক্ষুদ্র রাজ্যে শাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর, তিনি বাংলার অন্যান্য ক্ষুদ্র রাজ্যগুলিকে একত্রিত করে সেন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
বিজয়সেন পাল সাম্রাজ্যের শেষ রাজা মদনপালকে পরাজিত করে গৌড়ের সিংহাসন দখল করেন। এরপর, তিনি ধীরে ধীরে বাংলার অন্যান্য ক্ষুদ্র রাজ্যগুলিকে একত্রিত করে সেন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তার শাসনামলে সেন সাম্রাজ্যের সীমানা উত্তরে দাক্ষিণাত্যের চালুক্য সাম্রাজ্য এবং দক্ষিণে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
বিজয়সেন ছিলেন একজন দক্ষ শাসক। তিনি তার রাজ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি হিন্দুধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন মন্দির ও বিহার নির্মাণ করেন এবং হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলি সংস্কার করেন।
বিজয়সেনের অবদানগুলি নিম্নরূপ:
- রাজনৈতিক অবদান: বিজয়সেন সেন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং তার সীমানা বিস্তৃত করেন। তিনি বাংলায় শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করেন।
- ধর্মীয় অবদান: বিজয়সেন ছিলেন একজন ধার্মিক রাজা এবং তিনি হিন্দুধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন মন্দির ও বিহার নির্মাণ করেন এবং হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলি সংস্কার করেন।
- সাংস্কৃতিক অবদান: বিজয়সেন বাংলার সাংস্কৃতিক উন্নতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলায় শিক্ষা ও শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে উৎসাহিত করেন।
বিজয়সেনের শাসনামলে সেন সাম্রাজ্য বাংলার ইতিহাসে একটি স্বর্ণযুগের সূচনা করে। তিনি বাংলার রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বিজয়সেনের সময়কালে নির্মিত কিছু উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য নিম্নরূপ:
- নবদ্বীপের নবরত্ন মন্দির: নবদ্বীপের নবরত্ন মন্দির সেন সাম্রাজ্যের অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য। এটি বাংলাদেশের নদীয়া জেলায় অবস্থিত।
- পশ্চিমবঙ্গের কুলটি বৌদ্ধ বিহার: পশ্চিমবঙ্গের কুলটি বৌদ্ধ বিহার সেন সাম্রাজ্যের অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদীয়া জেলায় অবস্থিত।
- বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার রামসাগর মন্দির: বাংলাদেশ রাজশাহী জেলার রামসাগর মন্দির সেন সাম্রাজ্যের অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য। এটি বাংলাদেশের রাজশাহী জেলায় অবস্থিত।
বিজয়সেনের মৃত্যুর পর তার পুত্র বল্লাল সেন সেন সাম্রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন। বল্লাল সেনও ছিলেন একজন দক্ষ শাসক এবং তিনি তার পিতার মতোই বাংলার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।